কান্না মানুষের একটি স্বাভাবিক প্রাকৃতিক প্রতিক্রিয়া, যা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। তবে অতিরিক্ত কান্না কি মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তির ওপর প্রভাব ফেলে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিমিত পরিমাণে কান্না মস্তিষ্কের জন্য উপকারী। কান্নার সময় শরীরের কোর্টিসল ও অ্যাড্রেনালিন-এর মতো স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা কমে যায়। এর ফলে মন শান্ত থাকে এবং স্মৃতিশক্তি ভালো থাকে।
কিন্তু যখন কান্না নিয়ন্ত্রণহীন ও দীর্ঘমেয়াদি হয়ে যায়, তখন এটি মস্তিষ্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি মানসিক চাপ এবং অতিরিক্ত কান্নার কারণে মস্তিষ্কের হিপোক্যাম্পাস-এর কার্যকারিতা কমে যেতে পারে। এই হিপোক্যাম্পাস স্মৃতি সংরক্ষণ এবং নতুন কিছু শেখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘমেয়াদি স্ট্রেস হিপোক্যাম্পাসের কোষের ক্ষয় ঘটাতে পারে, যার ফলে স্মৃতিশক্তি প্রভাবিত হয়। এছাড়াও, অতিরিক্ত কান্না ঘুমের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে মস্তিষ্ক নতুন তথ্য সংরক্ষণ এবং শেখার ক্ষমতা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারে না। কিছু জন্মগত ও মানসিক রোগও অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও কান্নার সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ:
- মানসিক চাপ কমাতে নিয়মিত বিশ্রাম ও মেডিটেশন করা জরুরি।
- প্রয়োজন হলে মানসিক সমর্থন নিন।
- দীর্ঘমেয়াদি স্ট্রেস বা অতিরিক্ত কান্নার অভ্যাস থাকলে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বা থেরাপিস্টের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
কান্না স্বাভাবিক ও স্বাস্থ্যকর হলেও, অতিরিক্ত ও নিয়ন্ত্রণহীন কান্না মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি, শেখার ক্ষমতা এবং ঘুমের গুণমানকে দীর্ঘমেয়াদে প্রভাবিত করতে পারে।
আলআমিন রাফি
অনলাইন